5
করোনায় সিরাজদীখান উপজেলায় এখন পানির দরে বিক্রি হচ্ছে দুধ। বাজারগুলোতে ক্রেতাসমাগম নেই, সেই ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের মিষ্টান্ন ভান্ডারগুলো বন্ধ থাকায় এ উপজেলায় উৎপাদিত দুধ অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে যেখানে বোতলজাত এক লিটার মিনারেল ওয়াটার কিনতে লাগে ২০ টাকা, সেখানে এক লিটার দুধ পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। এক কথায় দুগ্ধ খামারিদের উৎপাদিত দুধ এখন বাজারে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে পানির দরেই। উৎপাদিত দুধ বিক্রি করতে না পেরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি দুগ্ধ খামারিদের কপালে এখন দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
এদিকে, অনেকেই ঋণ নিয়ে গড়ে তুলেছেন দুগ্ধ খামার। দুধ বিক্রি না হওয়ায় সে ঋণ এখন দুগ্ধ খামারিদের মাথার বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দুধ বিক্রিতে লোকসানের মুখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার সাড়ে তিনশ’ দুগ্ধ খামারি।
আবার অনেকে লোকসানের পাল্লা কমাতে অবিক্রীত দুধ দিয়ে ঘি তৈরি করছেন। তা ছাড়া খামারের গাভিকে খাবার কম দিয়ে দুধের উৎপাদন কমিয়ে আনছেন খামারিরা।
উপজেলার লতব্দী গ্রামের নুসরাত ডেইরি খামারে রয়েছে ২৬টি গাভি। এরই মধ্যে ৯টি গাভি থেকে ১০০ লিটার দুধ উৎপাদিত হয়ে আসছে- এমনটাই জানিয়েছেন খামারের স্বত্বাধিকারী আরিফ খান। তিনি বলেন, আগে ৭০ থেকে ৮০ টাকা লিটারপ্রতি দুধ বিক্রি হতো। করোনার কারণে সে দুধ লিটারপ্রতি এখন ২০ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার গোয়ালবাড়ির মা ডেইরি ফার্মের মালিক অরুণ ঘোষ জানান, রাজধানী ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানগুলোতে উৎপাদিত দুধ বিক্রি করেন তিনি। করোনার কারণে যানবাহনের অভাব ও মিষ্টির দোকান বন্ধ থাকায় সে দুধ বিক্রি হচ্ছে না। তার ফার্মের ৫০টি গাভি থেকে দৈনিক ৬০০ লিটার দুধ উৎপাদিত হয়। এখন ক্রেতার অভাবে স্থানীয়দের কাছে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে সে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কমকর্তা ডা. হাসান আলী বলেন, উপজেলায় ৩৬৬টি খামার আছে। হাসপাতালের ইমার্জেন্সি খোলা। প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত খাতে সারা বাংলাদেশের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। শুধু সরকারের ওপরের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, আমাদের কাছ থেকে গোয়েন্দা সংস্থা খামারিদের তথ্য নিয়েছে।