1
লাদাখের গালোয়ান উপত্যকায় ভারত-চীন সেনার সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান নিহত হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। গুরুতর জখম কমপক্ষে ১৭।
নিহত কর্নেল সন্তোষ বাবু বিহার রেজিমেন্টের অফিসার ছিলেন। সোমবার রাতে গালোয়ান উপত্যকায় অতর্কিতে ভারতীয় সেনার উপর আক্রমণ চালায় চীনের সেনা। ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছে, পারস্পরিক শান্তি চুক্তি মেনে সেনা সরিয়ে আনা হয়। সেনা সূত্রে খবর, গোলাগুলি নয়, পাথর-রড নিয়ে হামলা চালায় চীনের জওয়ানরা। পাল্টা জবাব দেয় ভারতও।
চীনের তরফে দাবি করা হয়েছে, তাদের ৫ জওয়ান নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে খবর এসেছিল, লাদাখে রীতিমতো যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। চীনের সংবাদমাধ্যমেও অবশ্য প্রকাশ্যে এসেছে, তাদের সৈন্যদেরও অনেকের প্রাণ গিয়েছে। নিহত ও আহত হয়েছে চীনের প্রায় ৪৩ জন সেনা।
জানা গিয়েছে, আহত ও নিহত চীনা সৈন্যদের নিয়ে যাওয়ার জন্যে সীমান্তে হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে চীন সরকার। বিবৃতি জারি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি ফেরানোর জন্য সামরিক এবং কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালাচ্ছে দুই দেশ।
সেনা সূত্রের খবর, চীনের সঙ্গে সংঘর্ষ গুরুতর আহত হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন ভারতীয় সেনা। আহত অবস্থায় প্রবল ঠান্ডার সঙ্গে লড়াই করতে পারেনি তারা। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ভারতীয় জওয়ানরা। রাতে গোটা বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং।
চীন সরকারিভাবে এখনও পর্যন্ত কোনও চীনা সেনার মৃত্যুর খবর জানায়নি। তবে, বেজিং প্রশাসনের মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসের প্রধান সম্পাদক টুইট করে জানিয়েছেন, গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষে চীনের সেনাও নিহত হয়েছে। সোমবার ১৫ জুন রাতে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চীন সংঘর্ষে দু-পক্ষেরই একাধিক সেনা হতাহত হয়েছে।
ভারতের তরফে বিহার রেজিমেন্টের এক সেনা অফিসার কর্নেল সন্তোষ বাবুসহ ২০ জন নিহত হওয়ার কথা বলা হলেও, বেজিং কিন্তু ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও এ নিয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি। ফলে, চীনের কজন সেনা মারা গিয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে, অসমর্থিত একটি সূত্রে চীনের ৪০ জন সেনা হতাহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
অন্যদিকে, লাদাখে ভারত-চীন সংঘাতের কয়েক ঘণ্টা পরেই আমেরিকা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলএসির পরিস্থিতি এখন কী অবস্থায় রয়েছে, সেদিকে তারা নিবিড়ভাবে নজর রাখছে। আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঘোষণা থেকে জানতে পেরেছেন ২০ জন জওয়ান প্রাণ হারিয়েছেন। মার্কিন বিদেশমন্ত্রকের ওই মুখপাত্র বলেছেন, লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে ভারত-চীন উভয়পক্ষই তত্পর হয়েছে। আমেরিকা বর্তমান পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধান আশা করছে।