5
‘করোনা’ বিশ্বব্যপী আতঙ্ক-উৎকন্ঠার নাম। সর্বমহল থেকেই আতংকিত না হওয়ার স্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও জনমনে তা প্রভাব বিস্তারে ব্যর্থ। তবে অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় দেশে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমিতের হার কম হওয়ায় বিষয়টি আমলে নেওয়ার ক্ষেত্রে গণ বা জন উদাসীনতা পরিলক্ষিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞ মহলের সুচিন্তিত অভিমত, অপরাপর দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ও যদি পর্যাপ্ত সংক্রমণ পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকতো তাহলে বর্তমান চিত্র ভিন্নতর হত। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডাঃ নাসিমা সুলতানা গতকাল মঙ্গলবার প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন দেশে মোট ২৫ টি কেন্দ্রে সংক্রমণ পরীক্ষা চলছে। অর্থাৎ দেশের ১৭ কোটি মানুষের করোনা সংক্রমণ পরীক্ষার জন্য মাত্র ২৫ টি কেন্দ্র। দেশের উপজেলা পর্যায়ে তো প্রশ্নাতীত, সিংহভাগ জেলার জন্য সবেধন নীলমনি ‘আই ই ডি সি আর’ ই শেষ কথা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানী সহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে কেবল করোনা সংক্রমনের নমুনা সংগ্রহ পূর্বক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। উল্লেখ্য যে, উপরোল্লিখিত ২৫ কেন্দ্রে যে সকল ব্যক্তিবর্গের করোনা সংক্রমিতের প্রাথমিক উপসর্গের লক্ষণ দেখা যায় তাদেরই পরীক্ষা করা হয়। এক্ষেত্রেও উপসর্গযুক্ত রোগীদের অশেষ বিড়ম্বনা বলাই বাহুল্য। রোগীরা ক্ষেত্রবিশেষ ব্যক্তিগত উদ্যোগে সোয়াব সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধর্না দিলেও অসহযোগীতায় ফিরতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিজ্ঞ মহলের ধারনা দেশের অন্তত ৮০ ভাগ জনগোষ্ঠীই সংক্রমণ পরীক্ষার আওতাবিহীন। বিশে^র প্রায় দেশগুলোর নাগরিকবৃন্দ ইচ্ছানুযায়ী সংক্রমণ পরীক্ষার সুযোগ ভোগ করেন। বর্তমান প্রেক্ষাপট অব্দি বাংলাদেশের জন্য যা অচিন্তনীয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক জানান, যে কোন নাগরিকের চাহিবা মাত্রই যদি সংক্রমণ পরীক্ষা সম্ভব হত, তাহলে নিঃসন্দেহে দেশে সংক্রমিতের চিত্রের ভিন্নতা প্রতীয়মান হত। তিনি আরো জানান, পর্যাপ্ত নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রের অভাবে সমাজে এমন ব্যক্তিও আছেন ইতোমধ্যেই সংক্রমিত কিন্তু তা নিজের কাছেই অজ্ঞাত।
উপরোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন করোনা সংক্রমন চিহ্নিতের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন হয়। এজন্য অতি অত্যাবশ্যক ‘ল্যাব প্রতিস্থাপন’। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুন্সীগঞ্জ জেলায় ল্যাব স্থাপন পূর্বক পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। কারন হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সরকারী ম্যাডিকেল কলেজগুলোতে ল্যাব স্থাপন সম্ভব হয়েছে। এছাড়া কিছু বিভাগীয় শহরে তা স্থাপিত হয়েছে। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, নারায়নগঞ্জে একটি ল্যাব স্থাপনের চেষ্টা চলছে, যদি সম্ভব হয় তাহলে মুন্সীগঞ্জবাসীর জন্য তা সুফল বয়ে আনবে।
সূত্রঃ মুন্সীগঞ্জের খবর