5
মুন্সীগঞ্জ জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে দুই জন চিকিৎসকসহ ৩১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। গতকাল জেলায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিলো ১৬৬ জন। মঙ্গলবার সকালে ৩ তারিখের পাঠানো নমুনার ১২২ জনের মধ্যে ৮১ জনের ফলাফল পাঠায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন ( নিপসম) । এতে ৩১ জনের ফলাফলে করোনা পজেটিভ আসে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৯৭ জনে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে মুন্সীগঞ্জ সদরে ১৫ জন, সিরাজদিখানে দুইজন চিকিৎসকসহ ১৫ জন এবং শ্রীনগরে ১ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন ডা: আবুল কালাম আজাদ। ইতিমধ্যে মুন্সীগঞ্জ জেলায় চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্য বিভাগের ২৯ জন স্বাস্থ্য কর্মীর করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। পাশাপাশি পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জেলায় ওসি তদন্ত, ওসি অপারেশনসহ ৬ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়। আক্রান্তের শংকায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং পুলিশ নিজেদেরকে গুঁটিয়ে নিয়েছে ।
জেলার বিভিন্ন প্রধান সড়কে থাকা চেক পোষ্টগুলো থেকে সরে গেছে পুলিশ সদস্যরা। এতে করে হঠাৎ করে মঙ্গলবার সকাল থেকে মুন্সীগঞ্জের প্রধান সড়কগুলোতে গণপরিবহন এবং মানুষের উপস্থিতি বেড়ে যায়। বাজারগুলোতেও বেড়ে যায় লোকসমাগম। যেন চিরচেনা সেই রূপে ফিরে গেছে মুন্সীগঞ্জ শহর।
বিশিষ্টজনেরা বলছেন, করোনা মহামারিতে শুরু থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়ছে পুলিশ। মানুষকে সচেতনতার পাশাপাশি করোনা মোকাবেলায় অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। করোনার আতংকে দেড় মাসেও সাধারন মানুষ সচেতন হয়নি। সব সময় তারা অসচেতনতার পরিচয় দিয়েছে। পুলিশকে কঠোর হস্তে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার দায়িত্বও দেয়নি সরকার এবং জেলা প্রশাসন। এই গণজমায়েতে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশরা আরো আক্রান্ত হবে। এই বাহিনীটিকে ইতিমধ্যে করোনা ঝুঁকিতে ফেলেছে বেপরোয়া মানুষগুলো। সহকর্মীদেও আক্রান্ত এবং মৃত্যুর খবরেও হারায়নি মনোবল। কিন্তু তাদেরও আছে পরিবার, স্ত্রী সন্তান এমনকি নিজের জীবনের ঝুকি। তারা আরো বলেন, শুরু থেকে সরকার সাধারন ছুটি ঘোষনা দিয়ে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার জন্য বললেও মুন্সীগঞ্জে সরকারী ১৫টি দপ্তরের কোন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীকে দেড় মাসেও দেখা যায়নি। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন নিজেদেরকে গুটিয়ে না নিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা চালানো উচিৎ বলে মনে করছেন তারা।
এদিকে রোগীদের বাড়ী লক ডাউন বা প্রতিবেশীদের না জানানোর ফলে অনেকেই অবাদে ঘুরাফেরা করছে এখনও।এতে করে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। শহর জুড়ে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে চোখে পড়ার মত প্রশাসনের কোন ভূমিকা আজও দেখা যায়নি। দিন দিন করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে জেলার সচেতন মানুষগুলো আতংকিত এবং চিন্তিত হয়ে পড়ছে।