5
আলু উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত মুন্সীগঞ্জ জেলার কৃষকরা আগাম আলু উত্তোলন শুরু করেছে। বাজারে নতুন চাহিদা এবং দাম বেশী থাকায় আলু উত্তোলন শুরু করেছে। বর্তমান বাজারে নতুন আলু পাইকারী ৫৫ টাকা এবং খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে। এতে করে কৃষকা উৎপাদন খরচের তুলনায় ৫ গুন পরিমান লাভ পাচ্ছে। আগাম আলু উৎপাদনে এলাকা ভেদে কৃষকদের উৎপাদন খরচ পড়েছে ১২ থেকে ১০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আগাম আলু পাইকারী বাজারে ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। সর্বচ্চো দাম পাওয়ার জন্য কৃষকরা ৬৯ দিনের মাথায় আগাম আলু উত্তোলন শুরু করেছে। জমিতে আলুটা যদি আরো ১৫ দিন কৃষকরা রাখতো তাহলে ফলনের পরিমানও বেড়ে যেতে। তবে কৃষকরা মনে করছেন ফলন বেশীর আশায় থাকলে বর্তমান বাজারের দামটা তারা পাবেন না। এজন্য কৃষকরা উর্ধমুখী বাজার মূল্যে আলু বিক্রির জন্য আলু উত্তোলন শুরু করেছে। আগাম আলু বিক্রি করে কৃষকরা উৎপাদন খরচের ৪ গুন পরিমান আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাঁসি ফুটেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরমশুরা, ঝাপটার চর, বকচর, কালিরচর, বজ্রযোগিনী, রামপালসহ উপজেলার বেশ কিছু স্থানে কৃষকরা আগাম তুলে বাজারজাত করছেন। চর ঝাপটা গ্রামের কৃষক আজিজুল তার ৭০ শতাংশ জমিতে আগাম আলু চাষ করে। তিনি তার ৭০ শতাংশ জমির আলু ১ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকায় জমিতেই বিক্রি করে দিয়েছেন। বেপারীরা শ্রমিক দিয়ে জমির আলু তুলে নিয়ে যাচ্ছে। ডায়মন্ড জাতের গোল আলুগুলো জমিতে চকচক করছে। শ্রমিকদের মধ্যেও ছিলো ব্যাপক ব্যস্ততা। দ্রæত সময়ের মধ্যে বাজারে পৌছানোটাই যেন তাদের মূল লক্ষ্য । কালিরচর এলাকায় আরেক কৃষক সামছুল শেখ তার জমির আলু উত্তোলন করছেন । তিনি জানান, দু”দিন আগে তিনি তার একটি জমির আলু বাজারে বিক্রি করে ২ লক্ষ টাকা পেয়েছেন। সেই জমিতে আলু আবাদে তার খরচ পড়েছিলো মাত্র ৪৭ হাজার টাকা। এ কারনে তিনি তার আগাম রোপন করা আরো ৬০ শতাংশ জমির আলু পাইকারী বাজারে নিয়ে বিক্রি করবেন। কৃষক সামছুল শেখ আরো জানান, এবছর আগাম আলু উৎপাদনে তিনি সব খরচ বাদ প্রায় ৪ লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন। এছাড়াও ইতিপূর্বে তিনি টমেটো, বেগুনসহ অন্যান্য শীতকালীন সবজি বিক্রি করে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা আয় করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, জেলার আগাম আলু চাষিরা আলু উত্তোলন শুরু করেছে। বাজারে নতুন আলুর চাহিদা আর দাম অনেক। দিন যতো যাবে আলুর দাম কমতে থাকবে তাই কৃষকরা রোপনের ৬৯ দিনের মধ্যেই আলু তুলে ফেলছেন। তিনি আরো বলেন, জমিতে আলুর ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরাও আলু উৎপাদন খরচের কয়েকগুন বেশী মুনাফা পাচ্ছে। জেলা জুড়ে আগাম আলু চাষিরা অধিক পরিমানে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে আগাম আলু বিক্রি করে।