মুন্সীগঞ্জ প্রধান ডাকঘর ছয় দিন বন্ধ থাকার পর আজ মঙ্গলবার স্বল্প পরিসরে চালু হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ প্রধান ডাক ঘরে মেইল ব্যবস্থাপনাসহ ডাক সংক্রান্ত কার্যাদি সচল হয়েছে। তাই জরুরি চিঠিপত্র ও ডকুমেন্টস গ্রহণ করতে পারছে। তবে লোকবল সঙ্কট থাকায় এখনই সঞ্চয় শাখার কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। লোকবল সমন্বয় করে আগামী সপ্তাহ থেকে সঞ্চয় শাখাও চালুর প্রচেষ্টা চলছে বলে জানান, পোস্ট মাস্টার মোসলেম হালদার। তিনি জানান, করোনার উপসর্গ থাকায় বুধবার প্রধান ডাকঘরের ১০ জন স্টাফের নমুনা দেয় হয়। পরে উর্ধতনদের পরামর্শক্রমে করোনা সংক্রমণরোধে জেলার প্রধান ডাকঘরটি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। পরে ৫ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে। তবে তিনিসহ অন্যদের নেগেটিভ এসেছে।
তিনি জানান, তবে জেলার অন্য ১৩৩টি পোস্ট অফিসের কার্যক্রম চলমান ছিল এখনও চলমান আছে। এর মধ্যে জেলার ২৯ সাব পোস্ট অফিসের মধ্যে ৫টি উপজেলা পোস্ট অফিসসহ ১৪টি বিভাগীয় অফিসে সঞ্চয় শখারও লেনদেনও চলমান আছে। বাকী ১৫টি অফিসে আগে থেকেই সঞ্চয় বিভাগ নেই, তাই টাকা লেনদেনও নেই। উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ে ডাক বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রম এখনও চলমান। এছাড়া জেলার ১০৪টি শাখা ডাকঘরেও ডাক বিভাগেরও স্বভাবিক কার্যক্রম চলমান। তবে প্রধান ডাকঘরে করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় বিগত ৬ দিন জেলার প্রধান ডাকঘর বন্ধ ছিল। এ কারণে ১৪টি বিভাগীয় পোস্ট অফিসে লেন-দেন কার্যক্রম চললেও টাকার সঙ্কট দেখা দেয়। আজ মঙ্গলবার জেলা পোস্ট অফিস থেকে ১৪টি বিভাগীয় পোস্ট অফিসে গ্রাহকের চাহিদা যাতে সম্পন্ন করা যায়, সেব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সাব পোস্ট অফিসে এই সার্ভিস চালুসহ মুন্সীগঞ্জ প্রধান ডাক ঘরে মেইল ব্যবস্থাপনাসহ ডাক সংক্রান্ত কার্যাদি চালু এখন চলছে। তাই মুন্সীগঞ্জ ডাক বিভাগের অচলতা অনেকটাই কেটেছে। সর্তকতার সাথে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কার্জাদি চলছে।
বিভাগীয় ১৪টি পোস্ট অফিসের মধ্যে-টঙ্গীবাড়ি, লৌহজং, শ্রীনগর, সিরাজদিখান ও গজারিয়া উপজেলা পোস্ট অফিস এবং শ্রীনগর উপজেলার হাসাড়া ও ভাগ্যকূল, সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা, মালখানগর ও শেখরনগর, টঙ্গীবাড়ি উপজেলার দিঘিরপাড়, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রিকাবী বাজার ও মিরকাদিম, লৌহজং উপজেলার হলদিয়া বিভাগীয় পোস্ট অফিসে লেন-দেন চালু রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। সঞ্চয় শাখা চালু এই ১৪টি পোস্ট অফিস থেকে ক্ষুদ্র আমানতকারীগণ সেবা গ্রহণ করতে পারছেন। জেলার প্রধান ডাক ঘর ছাড়াও জেলায় মোট ১৩৩টি স্থানে ডাক বিভাগের কার্যক্রমে সাবধানতার মধ্যে সচল রাখা আছে বলে পোস্ট মাস্টার জানান । এই ১৩৩টি ডাক ঘরেই কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। তবে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চিত করে সেবা প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জের প্রধান ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার মোসলেম হালদার।
ডাকঘরের ৫ স্টাফের করোনা
মুন্সীগঞ্জ প্রধান ডাকঘরের ৫ স্টাফের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে হিসাব রক্ষক আলী আজগর (৪৩), অপারেটর মোহাম্মদ হোসেন (৪৫) খোরশেদ আলম (২৯), হেড পোস্টম্যান আব্দুল বাতেন মুন্সী (৫৪) ও আউটসোসিং ফজলে রাব্বি (২৩) । গত বুধবার পোস্ট অফিসটির ১০ জনের সোয়াব পরীক্ষার জন্য দেয়া হয়েছিল।
পোস্ট মাস্টার জানান, করোনা শনাক্ত হওয়া সকল স্টাফকে স্ব স্ব বাসায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তিনি জানান, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম ছয়দিন পরে চালু হলো। তিনি বলেন , প্রধান ডাকঘরে ২২ জন স্টাফ। এখন ১৭ জনেই কার্যক্রম চলছে। তাই সঞ্চয় বিভাগের লেন-দেন চালু করা যায়নি। এদিকে ক্ষুদ্র আমানতকারীরা তাদের লভ্যাংশ তুলতে না পারায় নানা বিড়ম্বনায় রয়েছে। জেলা প্রশাসক মো.মনিরুজ্জামান তালুকদার সভ্যতার আলোকে জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ রূপেই প্রধান ডাকঘরের সেবা প্রদান চালুর ব্যাপারে চেষ্টা করা হচ্ছে। মূল ডাকঘর চালু হয়েছে, এখন আশা করা যায় শিঘ্র সঞ্চয় শাখাও চালু করা যাবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে সকলকে সব ধরণের সেবা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।